শুক্রবার, ১১ জুন, ২০২১

লেবু গাছের আগা মরা/Die back বা এনথ্রাকনোজ/Anthracnose রোগ ও তার প্রতিকার

 লেবুগাছে আগা মরা/Die back বা এনথ্রাকনোজ/Anthracnose রোগ হলে সাধারণত কি কি সমস্যা দেখা যায় সেগুলো কি ভাবে সমাধান করা যায় সেই সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হলো:

রোগের নাম: আগা মরা/Die back বা এনথ্রাকনোজ/Anthracnose

রোগের কারণঃ কোলেটোট্রিকাম গ্লোওস্পোরোয়ডিস/Colletotrichum gloeosporioides  নামক একরকম  ছত্রাকের আক্রমণে রোগ হয়ে থাকে

রোগের বিস্তারঃ এই রোগটি ছত্রাক ঘটিত, এই ছত্রাক মাটিতে ও গাছের পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে। বসন্তকালে বৃষ্টি পড়ার সাথে সাথে কালো বিন্দুগুলো ফেটে কনিডিয়াম বের হয়। বৃষ্টির জলের ছিটা ও বাতাসের সাহয্যে আক্রান্ত গাছ থেকে কনিডিয়াম ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্য গাছকে আক্রমণ করে।

রোগের লক্ষণ: 

  • পুরোনো পাতায় সবুজ দাগ দেখা যায়। 
  • ধীরে ধীরে সেগুলি বাদামি হয়ে যায়| 
  • পাতার আগায় ও কিনারায় এটা বেশি হয়| 
  • আক্রান্ত ডালগুলি আগার দিক থেকে  ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়, পাতা ঝরে যায় এবং ধীরে ধীরে মারা যায়|

রোগের প্রতিকার:

নীরোগ বীজতলার চারা ব্যবহার করতে হবে।

 মাটিতৈরির সময় অবশ্যই ভালো কোনো বায়ো ফাঙ্গিসাইড (ট্রাইকোডার্মা ভিরিডিসিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স)  ব্যবহার করতে হবে |    

 গাছের মরা ডালপালা,  আক্রান্ত ডাল পালা ও অতি ঘন ডাল পালা ছেঁটে পরিস্কার করে দিতে হবে।

 আক্রান্ত অংশ ছাটার সময় দাগের নীচেও কিছুটা সুস্থ অংশ কেটে ফেলতে হবে এবং কাটা অংশে বর্দোপেষ্ট বা ভালো কোনো ফাঙ্গিসাইড লাগাতে হবে।

 গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়িয়ে  ফেলতে হবে।

 গাছকে সতেজ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সুষম সার শিকড়ের চারপাশে দিয়ে জল সেচ দিতে হবে।

 প্রোপিকোনাজোল গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার জলতে ০.৫ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে গাছে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে  হবে।


বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১

জৈব পটাশ এর উৎস/ Sources of Organic Potash

 


উৎস

N%

P%

K%

বড়জাতের সামুদ্রিক শ্যাওলা/Kelp

1

0

1.2

সবুজ বালি/green sand

0

0

3

শক্ত কাঠের ছাই /Hardwood Ash

0

0

1-10

আলফালফা/Alfalfa

2

1

2

ভেড়ার বিষ্ঠাসার /Sheep Manure

0.7

0.3

0.9

ছাই/ Ash

0

1

3

কলার খোসা/ banana skins

0.6

0.4

11.5

বাদুড়ের মল /Bat Guano

8

6

1

তুলোর বীজের গুঁড়ো /Cotton Seed Meal

6

3

1

গোবর সার/Cow Manure

2.5

1

1.5

মুরগির বিষ্ঠা সার/Chicken Manure

0.9

0.5

1.5

মাছ গুঁড়ো/Fish Meal

10

5

4

কেঁচোসার/Vermicompost

2

1.60

1.50

 

 

সোমবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮

আস্থার সাথে আপনার কাঙ্খিত ফুলের বাগান গড়েতুলুন



শহরাঞ্চলের আমাদের অধিকাংশ লোকেরই বাগান করার জন্য প্রয়োজনীয় জমি নেই, তাই টবে গাছ লাগিয়েই  এই শখ মেটাতে হয় টবে গাছ লাগাবার পদ্ধতি বাগানের গাছ অপেক্ষা ভিন্ন অনেকেই টবে ফুলের চাষ করতে গিয়ে পুরোপুরি সফল হননি আজ আমরা এখানে আলোচনা করবো কি ভাবে আপনি ক্ষতিকারক রাসায়নিক সারের প্রভাব কমিয়ে, জৈব উপায়ে আপনার সখের ছাদ বাগান বা  আপনার ব্যালকনিতে গড়ে তুলতে পারেন আপনার শখের বাগান আশাকরি এই আলোচনা থেকে সকলে উপকৃত হতে পারবেন

টবে ফুলগাছ লাগানোর আগে সঠিক ভাবে টবের মাটি তৈরী করা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার টবের আকার নির্ভর করে গাছের আকার বৈশিষ্ঠের উপর  বীজ থেকে চারা উৎপাদনের জন্য চাই চওড়া অগভীর টব মরশুমি ফুলের জন্য মাঝারী আকৃতির এবং একবর্ষজীবী, বহুবর্ষজীবী ঝোপ জাতীয় গাছের জন্য বড় আকারের টব প্রয়েজন হয়

ভাল ফুল পেতে চাইলে করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ

মাটি শোধন মূল মাটি তৈরী: - কাঙ্খিত উৎপাদন পেতে মাটি শোধন করা খুব জরুরি এর জন্য মাটিকে - দিন খুব ভালোভাবে রোদ খাওয়াতে হবে মাটির সাথে মেশাতে হবে আস্থা ভার্মিকম্পোস্ট, আস্থা টি. ভি. এবং আস্থা পি. এফ. এর অনুপাত হবে ৬ কেজি মাটি + কেজি আস্থা ভার্মিকম্পোস্ট + ১০০ গ্রাম আস্থা টি. ভি. +  ১০০ গ্রাম আস্থা পি. এফ. এরপর এই  মিশ্রণটি কোনো ছায়া যুক্ত স্থানে - দিন রেখে দিতে হবে এবং - দিন অন্তর জল স্প্রে করতে হবে
·         আস্থা ভার্মিকম্পোস্ট:- আস্থা ভার্মিকম্পোস্ট গাছের প্রয়োজনীয় ১৩টি খাদ্য সুষম ভাবে রয়েছে তার সাথে রয়েছে জিব্রালিক অ্যাসিড, এমাইনো  অ্যাসিড, হিউমিক অ্যাসিড, ইন্দোল এসিটিক অ্যাসিড এর মতো প্রায় ১৫০ রকমের হরমোনে উৎসেচক যা গাছের বৃদ্ধি সহ প্রচুর ফুল ধারনে সহায়তা করে এছাড়া আস্থা ভার্মিকম্পোস্ট মাটির পি. এইচ এর মাত্রা সঠিক রেখে গাছকে ছত্রাক ব্যাক্টরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে
·           আস্থা টি. ভি.:-  আস্থা টি. ভি. হলো ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি নামক ছত্রাক নাশক দিয়ে তৈরী একটি উপাদান যা সমস্ত ফুল গাছকে  ছত্রাকজনিত আক্রমণের হাতথেকে বাঁচায়   
·         আস্থা পি. এফ.:- আস্থা পি. এফ  হল সিউডোমোনাস ফ্লোরিসেন্স নামক জীবাণু দ্বারা তৈরী একটি ছত্রাক নাশক যা সমস্ত ফুল গাছের পাতার কালো ছোপ দাগ, খোলাপচা দাগ, নিমাটোড ঝলসা রোগ ইত্যাদি থেকে গাছকে রক্ষা করে

চারা রোপন: বীজ বা চারা রোপন করার আগে অবশ্যই গ্রাম আস্থা টি. ভি, গ্রাম পি.এফ এবং গ্রাম আস্থা রুটমাস্টার লিটার জলে মিলিয়ে তাতে বীজ চারা শোধন করে নিন এর ফলে বীজ চারা ছত্রাক মুক্ত হবে এবং দ্রুত শিকড় গজাবে কারণ আস্থা রুটমাস্টার হল একটি দ্রুত অঙ্কুরোদ্গম শিকড় গজানোর হরমোন আস্থা টি. ভি   পি.এফ  ব্যবহারের ফলে ছত্রাক জনিত আক্রমণের হাত থেকে গাছকে রক্ষা করা সহজ হবে

চারা লাগানোর পর গাছের পরিচর্যা : চারাগাছ লাগানোর পরপরই কড়া রোদে রাখা উচিত নয় কয়েক দিন ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে সহনশীল করে তারপর রোদে রাখবেনগাছ যখন দ্রুত বেড়ে উঠতে শুরু করবে তখন গাছকে সোজা রাখতে বাঁশের কঞ্চি বা স্টিক ব্যবহার করতে হবে
চারা লাগানোর - দিন পর লিটার জলের সাথে মিলিলিটার আস্থা বায়ো এন. পি. কে. মিশিয়ে গাছের গোড়ায় স্প্রে করে দিতে হবে আর একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে সেটা হলো নীম সর্ষের খোল প্রয়োগ যা খুব গুরুত্ব পূর্ণ তাই একটা পাত্রে কেজি আস্থা নীমসুপার এবং লিটার জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে, কমপক্ষে - দিন ভিজিয়ে রাখলে ভালো হয় এবার মিশ্রণ থেকে লিটার পরিমান নিয়ে তার সাথে লিটার জল মিশিয়ে গাছের গোড়া থেকে একটু দূরে প্রতিটা টবে দিতে হবে ঠিক একই ভাবে সর্ষের খোল ভিজিয়ে  রেখে নীম খোল দেবার ১০-১২ দিন পর দিতে হবে এইভাবে একবার নীমসুপার সর্ষের খোল অল্টারনেটিভলি  প্রয়োগ করতে হবে

·         আস্থা নীম সুপার:- আস্থা নীমসুপার হল ১০০ শতাংশ বিশুদ্ধ নিমখোল সব্জীচাষের মাটিতে নিমাটোড কৃমি ঘটিত রোগের হাত থেকে গাছকে রক্ষা করে আস্থা নীমসুপার তৎসহ মাটিতে জৈব কার্বনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং গাছের মূল খাদ্যের যোগান দেয়
·         আস্থা বায়ো এন. পি. কে.:-   মৃত্তিকাতে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাস এর যোগান দেয়, এছাড়াও এতে পাওয়া যায় গাছের প্রয়োজনীয় ভিটামিনস, ইন্ডোল এসিটিক অ্যাসিড, সাইটোকিনিনস, সিটকিনিনস, জিব্রালিন্সিস  এরমত সক্রিয় মেটাবলাইট যা উদ্ভিদ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে

ফুল গাছে স্প্রে : - ফুল গাছের ক্ষেত্রে গাছের দ্রুত বৃদ্ধি, দ্রুত ফুল আসা, অধিক ফুল আসা, ফুল ঝরা বন্ধকরার জন্য কিছু অনুখাদ্য, হরমোন ভিটামিন প্রয়োগ করা একান্ত জরুরি তাই গাছ লাগানোর ৭দিনের মধ্যেই আস্থা গ্রো-গোল্ড মিলিলিটার প্রতি  লিটার জলের সাথে মিলিয়ে গাছে স্প্রে করুন আস্থা গ্রো গোল্ডে চাররকম হরমোন সহ সমস্ত অনুখাদ্য আছে যা গাছকে দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে মরসুমি ফুলের ক্ষেত্রে আস্থা গ্রো-গোল্ড ১৫-২০ দিন অন্তর অন্তত - বার ব্যবহার করুন      
ফুল গাছে প্রচুর ফুল আনার লক্ষে এবং দুর্বল গাছকে দ্রুত সতেজ করে তুলতে অবশ্যই ব্যবহার করুন আস্থা জাইমসুপার মিলিলিটার প্রতি  লিটার জলে মিশিয়ে দুর্বল বা ঝিমিয়ে পড়া গাছে এবং অবশ্যই সমস্ত সুস্থ গাছে ঠিক ফুল আসার সময় থেকে ১০ দিন অন্তর অন্তর থেকে টি স্প্রে করুন আস্থা  জাইমসুপারে জিব্রালিক অ্যাসিড প্রচুর মাত্রায় থাকায় এটি গাছের দ্রুত বৃদ্ধি এবং অধিক ফলন নিশ্চিত করে

রোগ-পোঁকা দমন:- ফুল গাছে ল্যাদাপোঁকা, সবুজপোঁকা, পাতা ফুলের কুড়ি  ছিদ্রকারী পোঁকা ইত্যাদির আক্রমণ থেকে গাছকে রক্ষা করতে ব্যবহার করুন আস্থা কিলার (১০০০০ পি. পি. এম. নীম তেল)  - মিলিলিটার প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করুন তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে আস্থা কিলার হলো একটি জৈব কীটনাশক তাই এটি প্রিভেন্টিভ হিসাবে ভালো কাজ করে সুতরাং গাছ লাগানোর - দিন পর থেকেই এটা স্প্রে করতে হবে এবং - দিন পর পর স্প্রে করতে হবেএরফলে পোকা মাকড়ের আক্রমণ অনেক কম হবে

এর পরেও যদি সবুজমেরী, সাদামাছি মাকড়ের আক্রমণ লক্ষ্য করা যায় তবে তা প্রতিহত করতে ব্যাবহার করতে হবে আস্থা ধনুষ অথবা আস্থা কাতিল -.৫০ এম. এল. প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে 
এতেও যদি ভালো ফল না পাওয়া যায় তবে তা প্রতিহত করতে ব্যবহার করুন আস্থা ইমিডাফ্লু, এম. এল.  প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে